শুরুটা হয়েছিল গ্রীষ্মের কোন একটি দিনে। আমি তখন একসাথে পড়া শুরু করে দিলাম। তার কিছুদিন পরেই রমজান মাস শুরু হয়ে গেল। সে বলেছিল যে আমরা দৈনিক ৩ পৃষ্ঠা করে পড়বো। কারণ এর পরে আমি আমার cousin এর সাথে চিল করতে যাবো। এভাবে আমরা প্রতিদিন google hangout এ পড়া শুরু করে দিলাম। আমাদের task ছিল ৯৫ পৃষ্ঠা। প্রতিদিন ৩ পৃষ্ঠা করে পড়ে আমরা ১ মাসের মধ্যেই সেটি শেষ করে ফেললাম। ধীরে ধীরে আমাদের মধ্যে কথা বলার পরিমাণ বাড়তে থাকলো।
আমরা একে অপরের সাথে কথা চালু রাখলাম। ধীরে ধীরে আমারা একে অপরকে জানতে শুরু করলাম। একটা বিষয় যা আমি লক্ষ্য করলাম টা হল যে সে অনেক রাগী একটা মেয়ে। তবে তার কণ্ঠ অনেক ভরাট ছিল। একটা বিষয় আমি সব সময় মেনে চলতাম তখন। আর তা হল, সে রেগে গেলেও, আমি কখনো তার উপর রাগ করতাম না। সে মাঝে মাঝে আমাকে অনেক অপমান করত, কিন্তু আমি সেগুলোর জবাব খুবই কোমল ভাবে দিতাম। সে মাঝে মাঝে আমাকে তার মনের কথা শেয়ার করতো।
তার মনের মাঝে কিছু অস্থিরতা কাজ করতো, সেগুলো আমাকে বলতো মাঝে মাঝে আমাকে বলতো। আমি সেগুলো শুনার পরে তাকে সঠিক দিকনির্দেশনা দিতাম। এভাবে আর কিছুদিন পার হলো। একদিনের ঘটনা, আমরা একটি পড়া আলোচনা করছিলাম, সেদিন সে খুব রাগ দেখাচ্ছিল, আমি বলেছিলাম যে আজ কে বেশি গরু খেয়েছেন নাকি, যে আপনার মাথা গরম হয়ে গিয়েছে।
এ কথা শুনার পরে সে কিছুক্ষন চুপ করে থাকলো, এর পরে বলল যে এর আগে আমি একজনের সাথে পড়তাম, কিন্তু তার ব্যাবহার এর কারণে তার সাথে পড়া বন্ধ করে দিয়েছি। আমি চাইনা যে তার সাথে যেভাবে পড়া বন্ধ করে দিয়েছি, আপনার সাথেও ঠিক একই ভাবে পড়া বন্ধ করে দেই। এরপর থেকে তার সাথে আমি অনেক মেপে মেপে কথা বলতাম। কোন রকম কথা বলতাম না, যে করনে আমাদের পড়ালেখার ক্ষতি হয়।
এতদিন আমাদের মাঝে শুধু audio কলে কথা হতো এবং আমি তাকে কখনই দেখিনাই। মাঝে মাঝে সে আমাকে ভিডিও অন করে রাখতে বলতো, কিন্তু তার ক্যামেরা সে সব সময় অফ করে রেখে দিত।আমি পড়া নিয়ে এতো বেস্ত হয়ে পড়েছিলাম যে, সে আমাকে দেখার জন্য এইগুলা করতো, সেগুলো আমি খেয়াল করিনাই।
আমার social media profile ও সে কৌশলে দেখে নিয়েছিল। google hangout এ একটা feature আছে । সেটি দিয়ে computer screen শেয়ার করে দেখা যায়। সে সেটি দিয়ে আমার friend list দেখত, কাদের সাথে আমার chatting হয়, সেগুলো দেখতো। আমি কেন মেয়েদের সাথে chatting করি, সেগুলো সে দেখেছিল একদিন। এর পর থেকে সে আমাকে প্রায়ই খোঁচা দিয়ে কথা বলতো, সে বলতো যে আমি তো শুধু মেয়েদের সাথে কথা বলি। এভাবে আর কিছুদিন আমাদের কথা বলি, পড়ালেখা চালু রাখি।
সে তার social media তে কোন profile picture রাখতো না। হটাত একদিন দেখলাম সে তার profile picture দিয়েছে। প্রথম দিনে দিয়েছিল, নীল শাড়ী পড়া চিকন একটা মেয়ে, মডেলদের মত এক দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে তোলা হয়েছিল ছবিটি। আমি বুঝিনি যে মেয়েটি সব সময় একটি Fake profile চালায়, এমনকি তার নামটিও ছিল নকল, সে হটাত করে নিজের ছবি দিতে গেল কেন? শুধু একদিন না , এর পরের দিনেও নতুন একটি ছবি দিল, একই মেয়ের ছবি, কিন্তু আগের মত চিকন নয়, স্বাস্থ্য একটু ভাল হয়েছে, কিতু অতো মোটা নয়।
একটি restaurant এ বসে তোলা ছবি। এভাবে সে বেশ কিছুদিন ধরে ভিন্ন ভিন্ন ছবি দিতে থাকলো। তার ছবি দেখে তার শারীরিক গড়ন সম্পরকে যা বুঝলাম, তা দুই ভাবে বর্ণনা করা যেতে পারে। একটি হল তার চিকন সাস্থের বর্ণনা, আর অন্নটি হল তার মাঝারী সাস্থের বর্ণনা। চিকন সাস্থে ছিল ৩২ সাইজের স্তন, লম্বা চুল, নীল শাড়ী পড়া, চিকন কোমর, পেটে কোন মেদ নেই। লম্বা একটি মেয়ে। মুখ ছিল লম্বা গড়নের, গালে কোন মাংস নেই। prem choti
হাতের বাহু সরু, গলা লম্বা। গায়ের রঙ শ্যামলা। আর মাঝারী গড়নের যে ছবিটি দেখেছিলাম, সেখানে সালোয়ার কামিজ পড়া অবস্থায় ছিল সে। একটি চেয়ারে বসা ছবি। brown কালারের কামিজ পড়ে ছিল। বুকের এক পাশে ওড়না দেয়া। চুল একপাশে করে ফেলে রাখা ছিল। কামিজটি ঢোলা করে বানানো ছিল, তাই বুকের আকার তেমন স্পষ্ট করে বোঝা যাচ্ছিল না। তার পরেও মনে হচ্ছিল যে বুকের মাপ ৩২ থেকে বেশীই হবে। লম্বা ভরাট মুখ ছিল। এবং আগের থেকে আকর্ষণীয় লাগছিল।
আমি ছবি গুলো লক্ষ্য করেছিলাম, কিন্তু ছবি নিয়ে তার সাথে কোন রকম আলোচনা করিনি, কারণ আমার মধ্যে ভয় কাজ করছিল যে, যদি এই বিষয়ে কথা তার পছন্দ না হয়, তবে সে রাগ করতে পারে। আর রাগ করে যোগাযোগ বন্ধ করে দিলে তো আমাদের মাঝে আর পড়ালেখা করা হবে না।
এভাবে বেশ কয়েকবার ছবি পরিবর্তন করার পরেও যখন আমার তরফ থেকে কোন রকম সাড়া পাচ্ছিলনা, তখন সে ছবি দেয়া বন্ধ করে দিল। এবং profile picture আগের মত খালি রেখে দিল।
আমি একজন গল্পবাজ মানুষ। আমাদের মধ্যে পড়ার সময় আমি বিভিন্ন গল্প করতাম। একবার আমি তাকে বলেছিলাম যে আমার আগের বান্ধবীর সাথে আমি সহরাওয়ারদি উদ্যানে অনেক ঘুরেছি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ও অনেক ঘুরেছি। এবং সেই বান্ধবীর হাত ধরেছি। সেই বান্ধবীর সাথে অতিবাহিত দিনগুলির কথা অন্যদিন বলবো।
তো একদিন সে জিজ্ঞাসা করলো কোন মেয়ের সাথে আমি ঘুরেছি, হাত ধরেছি। আমি আর সে বিষয়ে তেমন কিছু তার সাথে শেয়ার করিনাই।
এর পরে আসতে আসতে আমরা একে অপরের সাথে নিজেদের কথা বলতে থাকলাম। আমি তো আমার আত্মীয়র বাসায় থাকতাম, সে আমার আসে পাশের সব কথা শুনত। আমার বাসায় একদিন জন্মদিন অনুষ্ঠান ছিল, সে তার ভিডিও টাও দেখেছিল, আমার বাসার সব মেম্বার দের ছবিও সে বিভিন্ন কৌশলে দেখে নিয়েছিল। আসলে সে আমার সাথে একসাথে পড়তে পড়তে আমার প্রতি আকর্ষিত হয়ে পড়ছিল।
আমিও তার প্রতি শুরু থেকেই আকর্ষণ বধ করছিলাম, কিন্তু আমি তা প্রকাশ করতাম না । সে অনেক বুদ্ধিমতি মেয়ে, তাই সে আসতে আসতে তার কৌশল প্রয়োগ করতে শুরু করে দিল। একদিন সে বুলে বসলো যে আমি পড়া লেখাতে মনোযোগ দিচ্ছিনা, তাই সে দেখতে চায় যে আমি কারো সাথে chatting করছি কিনা।
আমি নিরুপায় হয়ে তাকে আবার আমার social media friend list এবং আমার chat history দেখল। তখন সে বলল, যে আমি শুধু মেয়েদের সাথে কেন কথা বলে বেড়াই? আমি বললাম মেয়েদের সাথে কথা বললে কি সমস্যা? এর পরে সে বলল অন্য মেয়েদের friend list এ রাখা যাবে না। আর তাদের সাথে কথা ও বলা যাবে না, এটা না করলে সে আমার সাথে আর পড়বে না। যথারীতি তার কথা মেনে নিতে হল, friend list থেকে সব মেয়ে কে unfriend করে দিতে হল।
এর পরে সে নতুন আবদার নিয়ে হাজির হল, তাকে তার social media profile এর নাম ধরে ডাকা যাবে না। নতুন নাম দিয়ে ডাকতে হবে। এবং সে নামটিও তার পছন্দ হতে হবে।
চলবে…………