পিও বাবাই দাদা,
‘তমাকে আমি খুবি ভালবাসি।তমাকে ছারা আমি বাচবো না।’
ইতি,
তুলি
চিরকুটটা হাতে পেয়ে বাবাই ভুরু কুঁচকে কিছুক্ষণ কি যেন একটা ভাবলো তারপর পুরো চিঠিটার ভুল জায়গা গুলোয় লাল কালির পেন দিয়ে আন্ডার লাইন করলো শুধু তাই নয় চিঠিটার শেষ দিকে একটা নম্বরও দিলো ৪/১০(মানে তুলি ১০নম্বরের চিঠিতে মাত্র ৪ পেয়েছে)।
তুলি হচ্ছে বাবাই-এর পাশের পাড়ার মেয়ে; নিজেদের জানাজানি চেনাচিনি থাকার সুবাদে সম্পর্কে পাড়াতুতো বোন।
তুলি পড়ে ক্লাস ফাইভে আর বাবাই এই বছরই ক্লাস ইলেভেনে সায়েন্স নিয়ে ভর্তি হয়েছে। পড়ার প্রচুর চাপ তাই অনেক রাত অব্দিও জেগে থাকতে হয় মাঝে মাঝে। এই সব কিছুর মাঝে এই চিরকুটটা ওর রাতের ঘুম উড়িয়ে দিয়েছে।
শেষে কিনা তুলির মতো একটা পুচকি মেয়ে ওকে এরকম একটা প্রেম পত্র দিলো!
-নাহ!কাল সকালেই ওকে এই চিঠিটা ফেরত দিতে হবে।
কিন্তু সকালে উঠে বাবাই ওর সিদ্ধান্ত বদল করলো। চিঠিটা নিজের কাছে রেখে দিয়ে তুলিকে ডেকে খুব বকাবকি করে বলল
-‘তুলি তোর বয়স অনেক অল্প,একটা চিঠিই ঠিক করে লিখতে পারিসনি, প্রেমের মানে বুঝবি কি করে ? ভালো করে পড়াশুনা কর অনেক বড়ো হ। আর যদি এরকম অন্যায় করিস আবার কখনো,কাকু কাকিমাকে গিয়ে বলে দেবো।’
সব শুনে তুলি কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি চলে গেল। দেখতে খুব কষ্ট হলেও তুলির পক্ষে এখন এটাই ঠিক হবে ভেবে বাবাই চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকল।
দশ বছর পর…….
-‘কি ব্যাপার তুলি অসময় শুয়ে কেন ?
কি হয়েছে মা তোর চোখে জল কেন ? কত বার না তোকে বলেছি কাঁদবি না একদম।
তুই কাঁদলে যে আমার কষ্টের সীমা থাকে না কি হয়েছে বল আমাকে….’
-‘বাবা আমি বিয়ে করতে চাইনা,আমি পড়তে চাই, আমি চাকরি করতে চাই। আমি তোমার কাছে থাকতে চাই বাবা প্লিজ আমাকে দূরে পাঠিয়ে দিও না।’
-‘দূর বোকা দেখতে আসলেই কি আর বিয়ে হয়ে যায় ?কথায় বলে ‘লাখ কথা না হলে বিয়ে হয়না’।
আর কে বলেছে তোকে তুই আমাকে ছেড়ে চলে যাবি ? এই তো কাছেই থাকবি,যখন ইচ্ছে হবে চলে আসবি আমার কাছে।’
-‘কিন্তু বাবা,মা যে বললো ছেলে কোন স্কুলে পড়ায় নাকি বাইরে কোথাও যেন থাকে;আমাকে যদি নিয়ে চলে যায় সাথে করে আর কখনো যদি আসতে না দেয় ?আমি তোমাকে ছেড়ে থাকবো কি করে ?’
-‘হুম! তা তোর ভাবনাটা মন্দ নয় বুঝলি, আচ্ছা দাঁড়া কালকে যখন তোকে ওরা দেখতে আসবে আমি নাহয় একবার খোলাখুলি কথা বলে দেখবো। নে এবার উঠে পর এতক্ষণ বিছানায় শুয়ে থাকলে আলস্য লাগবে।
আর তুই তো তোর মাকে চিনিস একবার যদি দেখতে পায় সারা বাড়ি মাথায় করবে।’
-‘হ্যাঁ, আমি তো সারা বাড়ি মাথায় করি আর তোমরা তো সব ধোয়া তুলসী পাতা। আমাকে সারাক্ষণ জ্বালিয়ে মারছে তোমার মেয়ে সেদিকে দ্যাখো একবার।
এই যে মেয়ে শোনো সন্ধ্যেবেলা ছেলের বাড়ি থেকে তোমাকে দেখতে আসবে এই শাড়িটা পরে সুন্দর করে সেজে নিচে নামবে। দয়া করে আর আমার নাক কাটিও না ছেলের বাড়ির লোকের সামনে।’
(মা যে কখন দরজার আড়ালে এসে দাঁড়িয়েছিল তা বাবা-মেয়ে কেউ-ই টের পায়নি)কথা গুলো শোনার পর তুলি বুঝতে পারলো আর কোনো উপায় নেই। এই বিয়ে ওকে ভাঙতেই হবে, কিছুতেই ও এই বিয়ে করবে না।
অগত্যাবন্ধুদেরহেল্পনেবারজন্যসবাইকেফোনকরেকনফারেন্সএনিলোকিন্তুকারোকথাইওরমনেধরলোনাবিয়েভাঙতেগেলেএকটাস্ট্রংকারণচাইকারণছেলেটিআসলেতারমায়েরবন্ধুরছেলে।
এদিকে জোর কদমে তোড়জোড় চলছে ছেলের বাড়ির লোকেরা আসবে বলে। আর ওদিকে মায়ের কথা মতো শাড়ি পরে সেজে গুজে মুখটা ভার করে বারান্দায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে প্ল্যান করছে কি ভাবে এই বিয়েটা ভাঙা যায়। হঠাৎ কি যেন একটা দেখে মনটা আনন্দে নেচে উঠলো এক দৌড়ে নিচে নেমে গেল..
-‘মনি মা,কাকুন তোমরা ? নতুন গাড়ি কিনেছো তোমরা ? কই মা কিছু বলেনি তো আমাকে ?কতদিন পরে এলে আমাদের বাড়ি..আমাকে প্রায় ভুলেই গেছ তোমরা’ (অভিমানে মুখ ভার).
-‘ওরে বাবা এক্সপ্রেস ট্রেনের মতো এত কথার দৌড়ে আমি পারবো কি তোর সাথে ?এক এক করে সব উত্তর দেবো আগে ভেতরে তো আসতে দে।’
-‘হ্যাঁ হ্যাঁ এসো। দাঁড়াও আমি এখুনি আসছি।’ঠিক এক দৌড়ে যেমন নিচে নেমেছিলো তেমনি ওপরে উঠে গেল। খানিক পরে নেমে এলো হাতে একটা বড়ো পেন্টিং নিয়ে,বসার ঘরে তখন কথা বার্তায় ব্যস্ত মনি মা,কাকুন,আর তুলির বাবা মা আর বাবাই।
-‘এই নাও মনি মা, এটা তোমার জন্য আমি এঁকেছি। কেমন হয়েছে বলো তো ?’
-‘বাহ,খুব সুন্দর হয়েছে। কিন্তু তুই দেখেছিস কি কে এসেছে আমাদের সঙ্গে ?’
-‘কে ?বাবাই দাদা! তুমি ?কবে ফিরলে ? কই মা কিছু বলেনি তো..আমাদের বাড়িতেই বা এলে কখন ?কৈ আমি দেখতে পেলাম না তো ?
-‘এই তো বাবা মার সাথেই এসেছি,তা তুই যা রাজধানী এক্সপ্রেসের মতো দৌড়াদৌড়ি করছিলি আর পুলিশের মতো মাকে জেরা করছিলি তুই দেখতেই পাসনি আমাকে, আমি গাড়ির ভেতরেই ছিলাম। বাহ! ছবিটা খুব সুন্দর হয়েছে, তুই এতো সুন্দর আঁকা শিখলি কবে ?’
-‘বা রে, আমি তো এরকমই আঁকি’
মুখটা একটু রাগি রাগি করে বললো তুলি।
-‘তা তুই হঠাৎ শাড়ি পড়েছিস যে? কোথাও যাবি নাকি ?’
-‘এ বাবা জানো না ? আজকে তো আমাকে দেখতে আসবে ছেলের বাড়ি থেকে তাই তো মা আমাকে শাড়ি পড়তে বললো।’ওর কথা শুনে ঘরে উপস্থিত সবাই হেসে উঠলো।
-‘তাই নাকি ?আমরা তো জানতাম না..ইস বোধহয় ভুল দিনে এসে পড়লাম। আসলে বাবাই শহর থেকে ফিরে বারবার বলছিলো যে এখানে আসবে। তাই….’ ইতস্তত বোধ করেন বাবাইয়ের মা।
-‘না না ঠিক আছে..খুব ভালো হয়েছে যে তোমরা এসেছ’ তুলির বাবা হাসতে হাসতে বলেন।
শুধু একমাত্র তুলির মাতৃ দেবীর হাসির আড়ালে লুকিয়ে রইলো ভীষণ রাগান্বিত এক জোড়া চোখ যার অর্থ বোঝার মতো ক্ষমতা তুলির হলো না কিন্তু ঘরে উপস্থিত কারো কারো চোখ এই ঘটনা এড়ালো না। আবহাওয়া গরম দেখে মানে মানে সেখান থেকে কেটে পড়লো তুলি।
কিন্তুতাতেখুবএকটাসুরাহাহলোনা।রান্নাঘরথেকেমায়েরডাকপড়লো
-‘তুলি এদিকে এসো,আমাকে একটু হেল্প করো।’
মাতৃ আজ্ঞা অমান্য করা মানে আর রক্ষে নেই;তাই অগত্যা আবার ব্যাক টু হিটলারের সামনে।
যাইহোক,মা কিছু সেরকম বললো না।শুধু চুপচাপ চা এর ট্রে নিয়ে ওকে পিছন পিছন আসতে বললো ইশারায়।
চা জলখাবার শেষ হবার পর মনি মা-ই বললো
-“আমাদের মধ্যে বসে থেকে তোরা কি করবি ?যতক্ষণ না ছেলের বাড়ির লোক আসে,তোরা বরং বাইরে গিয়ে কথা বল না..”কিছুক্ষণ হলো ওরা ছাদে এসেছে। আকাশ আজ বেশ পরিষ্কার তাই তারা গুলো খুব স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।
-“ঠান্ডা হওয়ায় অন্ধকারে ছাদে দাঁড়াতে বেশ লাগে কি বল তুলি ?”
-“হ্যাঁ, আমার তো খুব ভালো লাগে, আমি তো রোজ আসি,এইখানে দাঁড়াই। জানো তো………….’
তুলি যে আরো কত কিছু বলে যাচ্ছে কোনো কোথায় কানে ঢুকছে না বাবাই-এর।
অবাক চোখে তুলির দিকে তাকিয়ে ওর কথা শুনছে।
একসময় বললো,
-“অনেকটা সময় আমরা ছাদে আছি,চল এবার নীচে যাই আমরা..তোকে দেখতে আসার বোধহয় সময় ও হয়ে গেল।”
সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে বাবাই হঠাৎ তুলিকে বলে বসলো
-“গোলাপি শাড়িতে তোকে খুব মিষ্টি লাগছে রে”….
এটার জন্য একদমই তৈরী ছিল না তুলি। কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো হাঁ করে,কিন্তু অজান্তেই ওর গালে পড়া লজ্জার লাল আভা বাবাই এর চোখ এড়ালো না।
সেদিনরাত্রিবেলাখাবারটেবিলেবসেতুলিস্বস্তিরনিঃশ্বাসফেললো,কারণপাত্র-পক্ষকোনএকঅজ্ঞাতকারণেআসেনি।
কিন্তু মা ফোনে কিছুক্ষণ কথা বলে,ফিরে এসে পরিষ্কার জানিয়ে দিলো
-‘ওনারা আসতে পারেননি বিশেষ কারণে,কিন্তু তুলিকে ওনারা চেনেন আর আমরাও ছেলেকে জানি,চিনি-তাই এই বিয়েটা হচ্ছে সামনের লগ্নেই….’
মায়ের পছন্দ করা ছেলেকেই ওকে বিয়ে করতে হবে। হাজার চেষ্টা করেও তুলি এই বিয়ে আটকাতে পারলো না…..
তুলির ভিজে চোখের সামনে একদিকে মায়ের দৃঢ় প্রতিজ্ঞ মুখ আর অন্যদিকে কানে ভাসতে লাগলো তার ছোটবেলার ‘অবুঝ প্রেম’ বাবাই দাদার‘তোকে খুব মিষ্টি লাগছে রে…’শেষ কথাটা।
আজ তুলির বিয়ে। মায়ের ওপর অভিমানের বশে ও ছেলেটার ছবি একবারও দেখেনি,কোন কিছুই জানতে ও চায়নি,পুরোটাই ভাগ্যের উপর ছেড়ে দিয়েছে সে।
তবুও কেন জানিনা,এই কদিন (বাবাই দাকে দেখার পর) বাবাইয়ের জন্য তার খুব কষ্ট হচ্ছে।
মনের কোথাও যেন একটা অপ্রাপ্তি বাসা বাঁধছে তার।
সকাল থেকেই বাড়ি ভর্তি লোকজন,একের পর এক অনুষ্ঠান সম্পন্ন হলো। সন্ধেবেলা যথারীতি বর এলেন বিয়ে করতে।
তুলির বন্ধুরা এসে খবর দিলো বড় নাকি দারুন হ্যান্ডসাম পুরো হিরো..কিন্তু তাতে কি ? ও তো এই বিয়েটা নিজের ইচ্ছাই করছে না তাই ওর বর কেমন হলো!তাতে ওর কোনো ইন্টারেস্ট নেই।
বর বাবাজি এসে গেছেন তাই বিয়েও শুরু হয়ে গেছে।
এবার শুভদৃষ্টির পালা;পান পাতায় মুখ ঢেকে তুলি এসে পড়েছে মণ্ডপে। কত সবাই কত কথা বলছে হাসি,ঠাট্টা,হৈ হুলোড় কিন্তু এদিকে একজনের চোখের জল বাঁধ মানছে না আর ওপর দিকের মানুষটার সবুর সইছে না।
ভিড়ের মধ্যে থেকে কেউ একজন বলে উঠলেন
-‘এতো ভারি জ্বালা হলো,ও তুলি মা পান পাতাটা সরা মা। লগ্ন পেরিয়ে যাচ্ছে বিয়েটা সময় মতো শেষ হবে না যে এবার।’
কোনো উপায় না দেখে বর নিজেই মাঠে নামলো
-‘ওই তুলি আমি আর কতক্ষণ এইভাবে দাঁড়িয়ে থাকবো ? আমার তো পা ব্যথা করছে এবার…’
কথাটা শোনা মাত্রই পান পাতা ফেলে তুলিকে হাঁ করে বরের দিকে তাকাতে দেখে সবাই হো হো করে হেসে উঠলো। এরপর এক এক করে বিয়ে,কন্যা বিদায়,বৌভাত সব অনুষ্ঠান শেষ হয়ে গেল…
এইখানেবলেরাখিযদিওকন্যাবিদায়েরসময়তুলিখুবকেঁদেছিলকিন্তুশ্বশুরবাড়িআসারপরথেকেওকেদেখেমনেইহয়নিযেএইমেয়েবিয়েকরবেনাবলেগোঁধরেছিল।
আজ ওদের ফুলশয্যা;খাটটা খুব সুন্দর করে সাজিয়েছে আর তার আরো শোভা বাড়িয়েছে আমাদের তুলি রানী। আকাশী বেনারসীতে আজ ওকে সত্যিই কোন পরীর থেকে কম লাগছে না।
কিন্তু সেই চঞ্চল ছটফটে মেয়েটা হঠাৎ করে এত চুপ হয়ে গেল কেন ? সেটাই ঠিক বোঝা যাচ্ছে না।
বিছানায় বসে অনেকক্ষণ ধরে এক ভাবে ওকে দেখে চলেছে ওর বর। মেয়েটা ঘুমিয়ে পড়লো না তো ?মুখ নামিয়ে কখন থেকে বসেই আছে।
হটাৎ করে বরটা বিনা ভূমিকায় বলে উঠলো
-‘তুলি, তুই মাধ্যমিকে বাংলায় কত পেয়েছিলিস রে ?’
কথাটা শুনে তুলি এমন ভাবে চমকে উঠলো যেন মনে হলো ভূত,পেত্নী,ব্রহ্মদৈত সবাইকে একসাথে দেখে ফেলেছে ও।
-‘মা…মা… মানে ?’
-‘মানে মাধ্যমিকে বাংলা নামের যে সাবজেক্টটা থাকে,তাতে কত পেয়েছিলিস তুই ?’
-‘দুটো মিলিয়ে একশো তিরিশ।’
-‘হুম….তা তুই এত নাম্বার পেলি কি করে ? টুকলি করেছিলি নাকি রে ?’
-‘না, মোটেও না। আমি ওসব করিনা। তুমি একদম বাজে কথা বলবে না বাবাই দাদা,আমি কিন্তু তাহলে মনি মাকে বলে দেবো।’
-‘প্রথম কথা,তুই আমাকে দাদা ভাবলেও ঠিক এই মুহূর্তে আমি তোকে বনু ভাবতে পারছি না সরি।
দ্বিতীয় কথা,আজ রাত্রে আমি তোকে ঠিক কি কি বলেছি বা কি কি করেছি কাল সকালে সেগুলো যদি তুই মাকে শোনাতে যাসও আমি লিখে দিতে পারি মা সেটা শুনতে চাইবে না।
তাই তুই আমার সাথে কোন ভাবেও পেরে উঠবি না,তার চেয়ে এ দিকে আয় তোকে একটা জিনিস দেখাই। কি বলতো এটা ?’
-‘একটা কাগজ তো।’
-‘এই নে,হাতে নে;নিয়ে ভালো করে দ্যাখ দেখি চিনতে পারিস কিনা ?’
-‘এটা তো…….’
-‘মনে পড়েছে ?’
-‘হুম, কিন্তু এতে এরকম লাল কালির দাগ দিয়ে আন্ডারলাইন করা আবার নাম্বার দেওয়া কেন ?’
এই চিঠিটা তুই অনেক ছোট্ট বেলায় আমাকে দিয়েছিলি,তখন তুই এতটাই ছোট ছিলি যে ভালোবাসা কাকে বলে সেটা বোঝার ক্ষমতা তোর ছিল না। তাই আমি তোকে সেদিন ফিরিয়ে দিয়েছিলাম।
সঠিক সময়ে আবার নিজের কাছে ফিরিয়ে নেবো বলে।
অনেক গুলো বছর অপেক্ষা করেছি তোর জন্য,প্রতিটা পদক্ষেপে নজর রেখে ছিলাম তোর ওপর যেখানেই ভুল পথে এগিয়েছিলিস আমি তোকে থামিয়ে দিয়ে ছিলাম;
হ্যাঁ এটা ঠিক তোকে কোনো দিনও বুঝতে দিইনি। কারণ আমি চাইনি তোর লেখাপড়ায় এর প্রভাব পড়ুক।’
-‘আগে বলো তো,আমার যে অন্য কোথাও বিয়ে..অন্য কোথাও দেখতে আসা..এসব কি ছিল ?’
-‘সবটা আমাদের দুই বাড়ির প্ল্যানিং ছিল বলতে পারিস। সবাই সব জানতো..তুই ছাড়া।
তুই সত্যিই খুব বোকা!নইলে পাত্র পক্ষের দেখতে আসার দিন হুট করে এলাম আমরা আর পাত্র পক্ষ ও কি এক বিশেষ কারণে না এসেই বিয়ের দিন পাকা করে ফেললো….এ ব্যাপারে তোর মনে কোন সন্দেহই এলো না..অদ্ভুত!’
-‘হুম আমি তো বোকা!তাই সবাই মিলে এই রকম ভাবে আমাকে বোকা বানালে’..
-‘দূর পাগলী…’
-‘আচ্ছা তুমি আমাকে সত্যিই এতটা ভালোবাসো ?’
-‘হ্যাঁ, বাসি তো। আর বাসি বলেই তো সেদিন চিঠিটা তোকে ফেরত না দিয়ে নিজের কাছে রেখে দিয়েছিলাম।
একটা ঠিকঠাক সময় দেখে এই চিঠিটা তোর হাতে তুলে দেবো বলে..আর আজ সেই ঠিকঠাক সময়’….বাবাই,নতুন বউ তুলিকে কাছে টেনে নেয়।
এরপরবাকিটাবরংওদেরব্যাক্তিগতইথাক।
আমরা বরং ওদেরকে নতুন জীবনের শুভেচ্ছা জানিয়ে যে যার কাজে মন দিই……
–
সমাপ্ত-